নূরজাহান ও মমতাজ-জাহান আরার নামে আমরা কেবলই শুনে আসছি। কিন্তু তাঁদের প্রকৃত জীবন প্রণালী অথবা ইতিহাস সম্পর্কে ক’জন-ইবা ঠিকমতো জানি! আনারকলি নামটি আমাদের খুব পরিচিত—তাঁকে নিয়ে কত কিচ্ছা-কাহিনী। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কে এই আনারকলি, কী-ইবা তাঁর পরিচয়? বাবার কন্যা গুলবদন ইতিহাস গ্রন্থ ‘হুমায়ূননামা’ লিখে প্রসিদ্ধ হয়ে আছেন। আবার খানজাদা বেগম নামের দুর্ধর্ষ নারী ছোট ভাই বাবরকে রক্ষা করার জন্য উজবেক দলবাতির হাতে শুধু ধরাই দেননি, তাকে বিয়েও করেন। এঁদের সম্পর্কে কতটুকু-ইবা আমরা জেনেছি? মোগলরা তিন শ’ বছরের বেশি সময় ধরে ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছে। এই সুদীর্ঘ শাসনামলের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হলেও বিস্ময়কর ব্যাপার যে, বাদশাহ জাহাঙ্গীরের মায়ের নাম আজ পর্যন্ত সন্দেহাতীতভাবে উদ্ঘাটন করতে পারেননি কোনো ইতিহাসবিদ। বাদশা আকবর নতুন নিয়ম চালু করেছিলেন—কোনো মোগল শাহজাদীর বিয়ে দেওয়া চলবে না। কাজেই মোগল শাহজাদীর প্রেমে পড়া অথবা তাদের বিয়ে করার অভিলাষ একজন যুবকের জন্য কী ধরনের মর্মান্তিক পরিণতি বয়ে আনতে পারে, সে কথা গতানুগতিক ইতিহাসের পাতায় উল্লেখ আছে। প্রতিটি মোগল বাদশার বৈশিষ্ট ছিল ব্যক্তিগত বিশাল হারেম বা জেনানা মহল। সেখানে শত শত নারীর বসবাস। এই দলের রাজমহিষী, রাজকুমারী, সম্ভ্রান্ত মহিলা, উপপত্নী-রক্ষিতা এবং পরিচারিকারা ছিলেন নানা জাতের, নানা বর্ণের। মূলত তাঁদেরই কথা বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থ, সমকালীন পর্যটকদের ভ্রমণ বৃত্তান্ত এবং পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত মোগল ইতিহাস সংক্রান্ত নিবন্ধ থেকে তুলে এনে রচিত হয়েছে ‘মোগল জেনানা’। এটা কোনো ইতিহাসবিদের গবেষণালব্ধ গ্রন্থ নয়, এটা সাধারণ পাঠক-পাঠিকাদের জন্য এমন একটি ইতিহাস আশ্রিত ও বস্তুনিষ্ঠ বই, যা পড়ে মোগল অন্তঃপুরের নারী সংক্রান্ত একটা সঠিক ধারণা পেতে পারেন। সেসব কথা বিবেচনায় এনেই বইটিকে টীকা-টিপ্পনির ভারে জর্জরিত হওয়া থেকে মুক্ত রাখা হয়েছে।
সূচিপত্র
পূর্বকথা ৭ জেনানা-ই-বাবর ১৪ প্রথম সম্রাজ্ঞী ২১ তৈমুরী শাহজাদী ২৭ গুলবদন ৩৩ মরিয়ম মকানি ৪০ পেটিকোট গভর্নমেন্ট ৪৭ হুমায়ুনের বেগম ৫৫ বাদশা বেগম ৬২ মরিয়ম জমানি অথবা রাজপুত বৃত্তান্ত ৭০ যোধা বাঈ বিতর্ক ৭৭ আনারকলি ৮৪ জগতের আলো ৯৩ রাহুগ্রাস ১০১ মমতাজ মহল ১০৯ দুই শাহজাদী ১১৭